সবুজ মনের রসদ
Ichchhamoti Logo

পান্ডা ভালুকের গল্প
হুয়ান নামে চীন দেশে এক শিকারী ছিল। একা একা জঙ্গলের মধ্যে কষ্ট করে দিন কাটতো তার।
একবার জঙ্গলের মধ্যে বহু কষ্টে একটা পান্ডা ভালুক ধরে ফেললো সে। পান্ডা ভালুকের চামড়ার অনেক দাম শহরে। যে দাম পাবে তাতে তার বেশ কিছু দিন আরামে চলে যাবে।
তাই সে মনে মনে গান গাইতে গাইতে চললো ,

 " তাইরে নাইরে না না
  ধরেছি একখানা
 পান্ডা ভালুক ছানা
চামড়া কেটে পশম  হবে  
  মাংস কেটে খানা"

বাড়িতে নিয়ে এসে পান্ডার হাত পা বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে। সে বড় বড় ছুরি তে শান দিতে লাগলো।
পান্ডা তখন হাত পা ছোঁড়ে আর কাঁদে

" হো হো হো হো হো
ভালোমানুষের পো
আজকে আমার জন্মদিনে
মেরে ফেললে গো "

কান্না শুনে হুয়ান-এর মন একটু নরম হয়ে এলো। হুয়ান কবে জন্মেছে সে নিজেই জানে না। কে যে তাকে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে রেখে গিয়েছিলো কে জানে।
হুয়ান তখন তাকে নামিয়ে বললো ," মিথ্যে বলছিস না তো ? আজ তোর জন্মদিন ? ঠিক আছে তবে আজ তোকে না মেরে কাল মারবো।"
পান্ডা তখন কাঁদতে কাঁদতে বললো , " আমার জন্মদিনে  মিষ্টি মনিচাই পাতা দিয়ে  নুডলস করে দেবে বলেছিলো আমার মা।"
হুয়ান বললো আমি  কাঁচা মাংস পুড়িয়ে নুন গোলমরিচ দিয়ে খাই।কাল খেয়েছি ইঁদুরের মাংস, আজ পেয়েছিলাম তোকে। ঠিক আছে তোর যখন শেষ ইচ্ছে এটাই তবে তাই হবে।
কোথায় পাবো সেই মিষ্টি মনিচাই পাতা?"
পান্ডা ভেবেচিন্তে বললো ,

" পাহাড় তলায় পথ দেখাবে
হলুদ ব্যাঙের ছাতা
সেইখানে এক কুয়োর গায়ে
সেই মনিচাই পাতা
সবুজ কচি পাতার গায়ে
তারার মতো ফুল
বেগুনি রং, চিনতে তাদের
করবে না তো ভুল "

হাঁটতে হাঁটতে হুয়ান চললো জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বহুদূর। বৃষ্টি হলো ঝুপঝুপিয়ে , পাহাড়ের মাথায় সাতরঙা রামধনু উঠলো। সেই রামধনুর ছায়া পড়লো ভেজা রাস্তার ওপরে সেখানে হুয়ান দেখে হলুদ হলুদ সোনা রঙের ব্যাঙের ছাতা। সেই ছাতা গুলোর রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে হুয়ান দেখে এক মস্ত কুয়ো।
সেই কুয়োর একদম তলার দিকে বেগুনি রং ছোট্ট ছোট্ট ফুল ফুটে রয়েছে। হুয়ান দড়ি বেঁধে কোমরে আস্তে আস্তে নামতে লাগলো কুয়োর একদম নিচে। বেশ অন্ধকারের মধ্যে সেখানে আস্তে আস্তে ঠাহর হলো একটা সুন্দর ফুটফুটে মেয়ে বসে আছে।
সে অবাক হয়ে বললো-" কে তুমি ? এখানে কী করে এলে ?"
মেয়েটার মুখে কোনো কথা নেই। অনেকদিনের খিদে তেষ্টায় মুখ শুকিয়ে গেছে। হুয়ান তাকে কুয়োর বাইরে তুলে এনে তার মুখে জল দিলো। মেয়েটা কাঁপা কাঁপা গলায় বললো - "আমার নাম ন্যান্সি নিওয়া। আমি সু হান বংশের রাজকুমারী।  একটা পান্ডা কে বাঁচাতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম  এই কুয়োর মধ্যে।"
দিনের শেষে হুয়ান সেই মনচাই পাতা আর রাজকুমারী কে নিয়ে যখন ঘরে ফিরে এলো। তখন দেখলো সেখানে এক সাদা পোশাকের বৃদ্ধ বসে আছেন।
তিনি হেসে বললেন আমি ক্যু ইউয়ান,  অর্কিডের দেবতা। জঙ্গলের প্রহরী। তুমি ভালো মানুষ হুয়ান। শিকারের মতো নিষ্ঠুর কাজ কোরো না। তোমার মঙ্গল হোক।"
এই বলে তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
হুয়ান তখন রাজকুমারী কে প্রাসাদে পৌঁছে দিয়ে এলো। রাজা তাকে অনেক পুরস্কার দিলেন আর রাজকুমারীর কথায় দেশের সমস্ত জঙ্গল দেখাশোনার ভার তার হাতে তুলে দিলেন।

পান্ডা ভালুকের গল্প

ছবিঃ পার্থ মুখার্জি

দ্বৈতা হাজরা গোস্বামী বর্তমানে বেঙ্গালুরর বাসিন্দা। গবেষণা করছেন বৈদিক সাহিত্য নিয়ে। ভালোবাসেন কবিতা ও ছোটগল্প লিখতে , ছবি আঁকতে, যে কোনো সৃষ্টিশীল কাজে ডুবে থাকতে, আর ছোটদের সঙ্গে সময় কাটাতে।

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথগ্রহণ করছি এবং তার সকল নাগরিক যাতে : সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার; চিন্তা,মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা; সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-সম্ভ্রম ও জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুনিশ্চিত করে সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে; আমাদের গণপরিষদে, আজ,১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর, এতদ্দ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ করছি, বিধিবদ্ধ করছি এবং নিজেদের অর্পণ করছি।
undefined

ফেসবুকে ইচ্ছামতীর বন্ধুরা